পেয়ারা চাষ (বাড়ির আঙিনা ও ছাদে )
পেয়ারা আমদের দেশে একটি অতি পরিচিত ফল। এটি দেখতে
যেমন সুন্দর খেতেও তেমনি সুস্বাদু। দেশী ফলের মধ্যে আমলকির পরে পেয়ারাতেই সবচেয়ে
বেশী ভিটামিন সি বিদ্যমান । এই পেয়ারা আমরা বাসা বাড়ির ছাদেই চাষ করতে পারি।
পুষ্টি মূল্য
পেঁয়ারা ভিটামিন সি
সমৃদ্ধ একটি ফল
ভেষজ গুণ
শিকড়, গাছের বাকল, পাতা এবং অপরিপক্ক ফল কলেরা, আমাশয় ও অন্যান্য
পেটের পীড়া নিরাময়ে কাজ করে।
মাটি
ও মাটি তৈরি
সুনিষ্কাসিত উঁচু জমি ও মাঝারি উঁচু জমি পেয়ারা চাষের জন্য উপযোগী। পেয়ারা চাষ করার জন্য সর্ব প্রথমে সঠিকভাবে মাটি
তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে বেলে দো-আঁশ মাটি হলে ভাল। প্রথমে ২ ভাগ বেলে
দোআঁশ মাটির সাথে ১ ভাগ গোবর এবং ৪০-৫০ গ্রাম টি,এস,পি সার এবং ৪০-৫০ গ্রাম পটাশ সার দিয়ে ড্রাম
বা টব ভরে পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে ১০-১২ দিন । অতঃপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে
আবার ৪-৫ দিন এভাবেই রেখে দিতে হবে । যখন মাটি ঝুরঝুরে হবে তখন একটি সবল সুস্থ
চারা উক্ত টবে রোপন করতে হবে।
গর্তে রোপনের ক্ষেত্রে
প্রতি গর্তে গোবর ২০ কেজি, পচা খৈল ২ কেজি, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম, এমওপি সার ২০০ গ্রাম
প্রযোগ করতে হয়। তবে বয়সবৃদ্ধির সাথে সাখে সারের পরিমানও বৃদ্ধি করতে হয়।
পেয়ারার চারার জন্য টব বা ড্রাম
ছাদে বা আঙ্গিনায় পেয়ারা
গাছের জন্য একটি অর্ধেক ড্রাম সংগ্রহ করতে হবে। ড্রামের তলায় ৩-৫ টি ছিদ্র করে
নিতে হবে । যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে । টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো
ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে ।
পেয়ারার জাত
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরণের পেয়ারার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে
বেশকিছু ভাল জাতের পেয়ারা আছে। এর মধ্যে এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-১ (মিষ্টি), এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৪ (আপেল),এফটিআইপি বাউ পেয়ারা-৬ (জেলি), এফটিআইপি বাউ
পেয়ারা-৫ (ওভাল),এবং থাই পেয়ারা উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও
ইপসা -১ এবং ইপসা -২ পেয়ারাও ভাল জাতের পেয়ারা ।
সার ব্যবস্থাপনা
পেয়ার গাছে নিয়ম করে সার প্রয়োগ করতে হবে। পেয়ারা
গাছ লাগানোর ৪/৫ মাস পর থেকে নিয়মিত ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর সরিষার খৈল পচা পানি
প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া পচা সরিষার খৈলের পানি পাতলা করে গাছের গোড়ায় দিতে পারেন।
এর ফলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর টব বা ড্রামের মাটি কিছুটা
খুঁচিয়ে দিতে হবে ।
অন্তবর্তীকালীন
পরিচর্যা
পেঁয়ারা সংগ্রহের পর ভাঙ্গা, রোগাক্রান্ত ও মরা শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে
ফেলতে হয়। তাতে গাছে আবার নতুন নতুন কুঁড়ি জন্মায়। পেঁয়ারা গাছ প্রতি বছর প্রচুর
সংখ্যক ফল দিয়ে থাকে। তাই মার্বেল আকৃতি হলেই কিছু ফল ফেলে দেয়া দরকার।
সেচ ও আগাছা
ব্যবস্থাপনা
খরার সময় ২-৩ বার পানি সেচ দিতে হয়। তাছাড়া গাছের গোড়া থেকে আগাছা
পরিষ্কার করতে হয়। পেয়ারার চারা লাগানোর পর লক্ষ্য রাখতে হবে কখনই
যেন গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। তবে যদি দেখা যায় যে গাছের গোড়া শুকিয়ে গেছে
তাহলে পানি দিতে হবে। গাছটিকে সোজা করা লাগাতে হবে । এবং একটি সোজা কাঠি দিয়ে
গাছটিকে বেধে দিতে হবে ।
কোন মন্তব্য নেই